দুর্নীতির অভিযোগ
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- আপলোড সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ০৯:২০:২৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৯-০৭-২০২৫ ০৯:২০:২৪ পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে আউট সোর্সিং নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি, হাসপাতালের ওষুধপত্র বাইরে বিক্রি করে দেওয়া, হাসপাতালের যন্ত্রাংশ কেনাকাটা এবং মেডিকেল সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন এক ভুক্তভোগী। সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন হাসপাতালের সাবেক ওয়ার্ড বয় মো. তৌহিদ মিয়া। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান স্বপনকে। এর আগেও ওই ভুক্তভোগী সাংবাদিক সম্মেলন করে আউট সোর্সিং নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেন। পরে দুদকেও অভিযোগ করেন তিনি। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে পরে আদেশ দিবেন বলে বাদীর আইনজীবী জানিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সুনামগঞ্জ পৌর বিএনপির সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর মো. মোশারফ হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা সাজিদুর রহমান, হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান জুবায়ের আহমদ, হাসপাতালের হেলথ এডুকেটর নয়ন দাস, শফিকুল ইসলাম ও গাউসিয়া ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ মজুমদার।
আদালতে দায়ের করা আবেদন থেকে জানাযায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান স্বপনের স্বাক্ষরে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। পরে গাউসিয়া ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একে আজাদ মজুমদারের সঙ্গে আতাত করে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে তার অদক্ষ কোম্পানিকে জাল কাগজপত্র থাকার পরও কাজ পাইয়ে দেন। আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগে হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশিয়ান জুবায়ের আহমদ ও হেলথ এডুকের নয়ন দাসের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক এসব দুর্নীতি করেন। তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান স্বপন তাদের মাধ্যমেই নিয়োগপ্রাপ্তদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও হাসপাতালের যন্ত্রাংশ ক্রয়, কিট, রাসায়নিক উপাদান, প্যাথলজি উপাদান ক্রয়সহ হাসপাতালের নানা উপকরণ কেনাকাটার নামেও তিনি দুর্নীতি করছেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়। একটি সিন্ডিকেট ভুয়া ও অখ্যাত কোম্পানির উপকরণ কমিশন পেয়ে ক্রয় করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মেডিকেলের দালালদের সহায়তায় হাসপাতালের লেবার ওটি না করে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল আনিসায় রোগী প্রেরণ করে কমিশন নিচ্ছেন। সরকারি বিনামূল্যের ওষুধপত্র রোগীদের না দিয়ে বাইরে থেকে উচ্চমূল্যে কেনানো হয় বলেও তিনি আবেদনে উল্লেখ করে বলেন, হাসপাতাালের বিনামূল্যের সরকারি ওষুধ ও মেডিকেল উপকরণ বাইরের ফার্মেসিতে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও হাসপাতালের সুই, সুতা, গজ-ব্যান্ডেজ ক্রয়েও অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ বাদীর। তাছাড়া এবার হাসাপাতালে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগে প্রার্থীদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে অন্তত কোটি টাকা ঘুষ নেয়া হয়েছে বলে মামলার আবেদনে উল্লেখ করেন তিনি।
অভিযোগকারী তৌহিদ মিয়া বলেন, এর আগেও আমি তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান স্বপনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ করেছি। এবার আদালতে সকল প্রমাণ দাখিল করে অভিযোগ দায়ের করেছি। আদালত আমার অভিযোগ আমলে নিয়েছেন।
আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগে লোক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গাউসিয়া ট্রেডার্স সিকিউরিটি ক্লিনিং এন্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ মজুমদার বলেন, আমি যথাযথ কাগজপত্র দিয়ে অংশগ্রহণ করেই দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়েছি। মূল্যায়ন কমিটির মূল্যায়নের পর আমাকে অনেক আগে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি কোনও দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত নই।
এ বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান স্বপনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
বাদীর আইনজীবী মো. আমিরুল হক বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এ বিষয়ে পরে আদেশ দিবেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ